
আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়- প্রতিবেশী আফগানিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনার জন্য শনিবার কাবুলে একদিনের সফরে পৌঁছেছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার।
তাঁর এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন পাকিস্তানে জঙ্গি হামলা বেড়েছে এবং ইসলামাবাদ এই সহিংসতার জন্য তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-কে দায়ী করছে। পাকিস্তান দাবি করছে, আফগান তালেবান এদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে — যদিও কাবুল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ বারবার অস্বীকার করেছে।
এছাড়া, পাকিস্তান সম্প্রতি “অবৈধ অভিবাসী”, যাদের বেশিরভাগই আফগান নাগরিক, তাদের দেশ থেকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া জোরদার করেছে। ইসলামাবাদ এদের আত্মঘাতী হামলা ও জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করলেও এর সপক্ষে সরাসরি কোনো প্রমাণ প্রকাশ করেনি। এই পদক্ষেপে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে,
“আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির আমন্ত্রণে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেনেটর মোহাম্মদ ইসহাক দার আজ কাবুলে একদিনের সফরে পৌঁছেছেন।”
দারকে স্বাগত জানান আফগানিস্তানের উপ-অর্থমন্ত্রী ড. মোহাম্মদ নাঈম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুফতি নূর আহমদ, প্রধান প্রোটোকল কর্মকর্তা ফয়সাল জালালি এবং কাবুলে পাকিস্তান মিশনের কর্মকর্তারা।
সফরের সময় ইসহাক দার আফগানিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মুহাম্মদ হাসান আখুন্দ, প্রশাসনিক উপ-প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আবদুল সালাম হানাফি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।
কাবুল সফরের আগে রাষ্ট্রায়ত্ত পাকিস্তান টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে দার বলেন,
“গত কয়েক বছরে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্কে কিছুটা শীতলতা এসেছে।”
তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তানের নিরাপত্তা, জনগণের জীবন ও সম্পদের সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মূল উদ্বেগগুলোর একটি হচ্ছে সন্ত্রাসবাদ, যা আমরা আলোচনায় তুলবো।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বিশাল।
“আমাদের মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সংযোগ রেলপথের মাধ্যমে গড়ে তোলা সম্ভব, কিন্তু সেটা আফগানিস্তানের অংশগ্রহণ ছাড়া সম্ভব নয়,” বলেন দার।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সফর পাকিস্তানের আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টারই অংশ, যেখানে দুই দেশের পারস্পরিক উদ্বেগ নিরসনের পাশাপাশি সহযোগিতার নতুন দিক উন্মোচনের সম্ভাবনা রয়েছে।