ঢাকাশনিবার , ১২ এপ্রিল ২০২৫
  1. Global News
  2. অপরাধ
  3. অভিযোগ
  4. অর্থনীতি
  5. আইন-বিচার
  6. আটক
  7. আন্তর্জাতিক
  8. আবহাওয়া
  9. কৃষি-সংবাদ
  10. খেলা-ধুলা
  11. জাতীয়
  12. জীবনযাত্রা
  13. ধর্ম
  14. প্রবাস প্রযুক্তি
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গাজায় শিশুরা যখন রক্তে ভেসে যাচ্ছে তখন কনসার্টে মত্ত সৌদি আরব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
এপ্রিল ১২, ২০২৫ ৩:০৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

গাজা যখন আগুনে পুড়ছে, তখন সৌদির ভূমিতে উৎসব এটি শুধু নৈতিকতার অবক্ষয় নয়, বরং ইতিহাস ও ধর্মের শিক্ষার প্রতি চরম উপহাস। ছবি : সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে যখন গর্জে উঠছে যুদ্ধবিমান, ফিলিস্তিনে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার শিশুরা যখন রক্তে ভেসে যাচ্ছে, তখন সৌদি আরবের ঐতিহাসিক শহর আল-উলায় চলছে ডিজে পার্টি ও আলোক উৎসব। গাজার রক্তাক্ত প্রেক্ষাপটে সৌদির এই বিলাসিতা ও উদযাপন বিশ্বজুড়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

গাজার ভেতরে চলছে ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ গণহত্যা। হাসপাতাল, স্কুল, সংবাদকেন্দ্র- কোনো কিছুই রক্ষা পাচ্ছে না ইসরায়েলি হামলা থেকে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এই পরিস্থিতিকে ‘মানবিক বিপর্যয়’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

এর মধ্যেই স্থানীয় সময় সোমবার (৭ এপ্রিল) পবিত্র মদিনা শহরের খুব কাছাকাছি আল-উলায় অনুষ্ঠিত হয় একটি বড় আকারের কনসার্ট। খবর মিডল ইস্ট মনিটর।

সৌদি সরকারের ব্যবস্থাপনায় এলিফ্যান্ট রক (জাবাল আল-ফিল) এলাকায় এ উৎসবে অংশ নেন দেশি-বিদেশি পর্যটক, তরুণ-তরুণী ও বিশিষ্ট ব্যক্তি। পশ্চিমা সংগীত, ডিজে পার্টি, আধুনিক পোশাকে নারী-পুরুষের মেলামেশা এবং পানাহার ছিল উৎসবের মূল আকর্ষণ।

এই আয়োজনের ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক মাধ্যমে সৃষ্টি হয় বিতর্ক। মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত বাস্তবতায় সৌদি আরবের এমন আয়োজনকে অনেকেই ‘নিষ্ঠুরতা’ ও ‘অবিবেচকের আচরণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

উল্লেখ্য, আল-উলা কোরআনে বর্ণিত একটি স্থান। এটি সেই এলাকা, যেখানে এক সময় বসবাস করত ‘সামুদ’ জাতি— যারা নবী সালেহ (আ.)-এর আহ্বানে সাড়া না দিয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। হাদীস অনুযায়ী, রাসুল (সা.) এই এলাকায় মুসলিমদের অবস্থান করা বা পানাহার থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই স্থানেই আজ ‘পপ ফেস্টিভাল’ আয়োজন করা হচ্ছে— যা ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, শুধু ধর্মীয় ভাবনার পরিপন্থী নয়, বরং ঐতিহাসিক সতর্কবার্তাকেও অগ্রাহ্য করা।

ফিলিস্তিনিদের ওপর ভয়াবহ গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে যখন প্রতিবাদ চলছে, তখন সৌদি আরবসহ অনেক আরব দেশ কেবল আনুষ্ঠানিক বিবৃতির বাইরে আর কিছুই করছে না। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বাধীন শাসনব্যবস্থার এই নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন বিশ্লেষকরা।

তাদের মতে, সৌদি যুবরাজ বর্তমানে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক মজবুত করতে চাচ্ছেন। তার ‘ভিশন ২০৩০’ পরিকল্পনার অধীনে সৌদি সমাজে যে সংস্কৃতির ঢল এসেছে, তা ঐতিহ্যবাহী ইসলামি মূল্যবোধ থেকে সরে গিয়ে পাশ্চাত্য ‘আধুনিকাত’র প্রতিফলন।

এদিকে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিরোধ আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত। কিন্তু এই প্রতিরোধকে যেভাবে ইসরায়েল দমন করছে, তা মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনেরই সামিল। পরিস্থিতি এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে, যেখানে আরব বিশ্বের কেবল বিবৃতি নয়— কার্যকর পদক্ষেপই পারে গণহত্যার শিকার ও নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়াতে।

আরব ইতিহাসে একসময় এমন নেতারা ছিলেন, যারা ন্যায় ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় লড়াই করেছেন। আজকের প্রজন্মের প্রশ্ন— এমন সময়ে কোথায় সেই নেতৃত্ব? কোথায় আরব বিশ্বের বিবেক?

বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন, এই উদাসীনতা ও নৈতিক বিচ্যুতি যদি অব্যাহত থাকে, তবে একদিন তরুণ প্রজন্ম এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়াবে। ইতিহাস বারবার প্রমাণ করেছে— অত্যাচারের বিরুদ্ধে নীরব থাকা মানেই সেই অত্যাচারকে সমর্থন করা।

গাজা যখন আগুনে জ্বলছে, তখন সৌদি আরবের কনসার্ট যেন মানবতার উপর আরেকটি আঘাত। এটি শুধু ফিলিস্তিনিদের প্রতি অবহেলা নয়, বরং ধর্ম, ইতিহাস ও বিবেকের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ। সময় এসেছে— আরব নেতৃত্ব আত্মসমালোচনায় ফিরুক, মানবতার পক্ষে দাঁড়াক এবং গাজার শিশুর কান্না যেন নাচ-গানের আওয়াজে ঢাকা না পড়ে।

In addition to creating news on this site, we collect news from various news sites and publish it with relevant sources. Therefore, if you have any objections or complaints about any news, you are requested to contact the authorities of the relevant news site. It is illegal to use news, photographs, audio and video from this site without permission.
আন্তর্জাতিক সর্বশেষ