
জনপ্রিয় বৈশ্বিক গণমাধ্যমে এপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়-– গত ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বিমান ও স্থল হামলায় গাজায় ৯০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
শনিবার প্রকাশিত এই তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য, অনেকেই আবার ‘মানবিক নিরাপদ অঞ্চল’ হিসেবে চিহ্নিত এলাকায় আশ্রয় নিয়ে ছিলেন।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অনেকে নারী ও শিশু। দক্ষিণের খান ইউনিস শহরে একটি তাবুতে আশ্রয় নেওয়া কয়েকজনও নিহত হয়েছেন, যেখানে হাজার হাজার উদ্বাস্তু মানুষ বসবাস করছে। ইসরায়েল পূর্বেই ওই অঞ্চলটিকে ‘মানবিক জোন’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল।
রাফাহ শহরের পৃথক হামলায় আরও ৪ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান হাসপাতাল। নিহতদের মধ্যে একজন মা ও তার মেয়েও রয়েছেন।
এই যুদ্ধ শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস-নেতৃত্বাধীন একটি হামলার মাধ্যমে, যেখানে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এরপর থেকে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছে ৫১,০০০-এরও বেশি মানুষ, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু বলে জানায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েল প্রায় ছয় সপ্তাহ ধরে গাজায় খাদ্য ও অন্যান্য সাহায্য সামগ্রী প্রবেশ নিষিদ্ধ রেখেছে, ফলে মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে। হাজার হাজার শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে এবং বেশিরভাগ মানুষ দিনে একবারের বেশি খেতে পারছে না।
গাজার বেশিরভাগ খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে, এবং যুদ্ধের কারণে ৯০ শতাংশ জনগণ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। তারা এখন বোমায় বিধ্বস্ত ভবন ও অস্থায়ী তাবুতে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো ও আন্তর্জাতিক সহায়তা গোষ্ঠীগুলো এই অবস্থাকে “চরম মানবিক বিপর্যয়” বলে আখ্যায়িত করেছে এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও পূর্ণ সহায়তা প্রবেশের দাবি জানিয়েছে।