
ইরাকের বেশ কিছু শক্তিশালী ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠী প্রথমবারের মতো নিজেদের অস্ত্র ত্যাগ করতে প্রস্তুত, যাতে মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধি করে একটি মারাত্মক সংঘর্ষ থেকে বিরত থাকা যায়।
রয়টার্সের সূত্রে জানা গেছে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে মার্কিন কর্মকর্তাদের বারবার দেয়া সতর্কতার পরিপ্রেক্ষিতে, যেগুলো তারা জানুয়ারিতে ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার পর ইরাক সরকারকে গোপনে জানিয়েছিল। কর্মকর্তারা ইরাককে সতর্ক করে বলেছিলেন যে, যদি মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো বাতিল না করা হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের উপর বিমান হামলা চালাতে পারে।
ইরাকের শিয়া মুসলিম রাজনীতিবিদ ইজ্জাত আল-শাহবন্দর রয়টার্সকে জানান, প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি এবং বেশ কয়েকটি মিলিশিয়া নেতার মধ্যে আলোচনা “খুবই অগ্রসর” হয়েছে, এবং গোষ্ঠীগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নিরস্ত্রীকরণের আহ্বানে সাড়া দিতে প্রস্তুত। তিনি আরো জানান, এই গোষ্ঠীগুলো তাদের বর্তমান অবস্থানে অবিচল থাকার দাবী করছে না এবং তারা জানে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো ইরানের অভিজ্ঞান বাহিনী (IRGC)-এর সহায়তায় নিজেদের অস্ত্রশস্ত্র গড়ে তোলে। এই গোষ্ঠীগুলো ইরানের আঞ্চলিক প্রক্সি বাহিনীর মূল স্তম্ভ হিসেবে কাজ করছে এবং সম্প্রতি গাজা যুদ্ধের পর তারা বেশ কিছু মিসাইল এবং ড্রোন হামলার দায় স্বীকার করেছে।
ইরাক সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী সুদানি ইরাকে সমস্ত অস্ত্রকে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য “গঠনমূলক আলোচনার” মাধ্যমে পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিছু গোষ্ঠী ইতোমধ্যেই তাদের সদর দপ্তর ফাঁকা করেছে এবং আকাশ হামলার শিকার হতে না পারার জন্য তাদের উপস্থিতি কমিয়ে দিয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা ইরাক সরকারকে মিলিশিয়াগুলোর উপর আরও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাপ দিয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, এই বাহিনীগুলোকে ইরাকের কমান্ডার ইন চিফের অধীনে কাজ করতে হবে, ইরান নয়।
এই পরিবর্তন এমন একটি সময় ঘটছে যখন ইরানের আঞ্চলিক “অ্যাক্সিস অফ রেসিস্ট্যান্স” অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছে, বিশেষ করে হামাসের ইসরায়েলে হামলার পর এবং ইসরায়েলের কঠোর প্রতিরোধের কারণে।
ইরাক বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরান উভয়ের সাথে তার সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে, এবং মিলিশিয়াগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।