
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক সাময়িকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়ার পর, চীন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে যে তারা আলোচনার জন্য প্রস্তুত — তবে সমান মর্যাদা ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হে ইয়ংকিয়ান এক বিবৃতিতে বলেন,
“চীনের অবস্থান স্পষ্ট ও অপরিবর্তনীয়: আলোচনার দরজা খোলা আছে, কিন্তু এই সংলাপ হতে হবে সমান ভিত্তিতে এবং পারস্পরিক সম্মানের ওপর প্রতিষ্ঠিত।”
তিনি আরও বলেন, “চীনের ওপর চাপ সৃষ্টি, হুমকি এবং ব্ল্যাকমেইল কোনো কার্যকর উপায় নয়। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও জয়-জয় পরিস্থিতির ভিত্তিতে আমরা পারস্পরিক পরামর্শের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে চাই।”
ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণা ও চীনের পাল্টা প্রতিক্রিয়া
বুধবার ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য প্রস্তাবিত ১০% শুল্ক বহাল থাকলেও, চীনের ওপর শুল্ক ১০৪% থেকে বাড়িয়ে ১২৫% করা হবে। সেইসঙ্গে বৃহস্পতিবার থেকেই চীনের পাল্টা প্রতিশোধমূলক শুল্ক ৮৪% কার্যকর হয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য কঠোর সুরে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে,
“যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অন্যায্য আচরণ ব্যর্থ হবে। চীন বাণিজ্য যুদ্ধ চায় না, তবে কোনো অবস্থাতেই ভয় পায় না। যদি যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধে এগিয়ে যায়, তবে চীন শেষ পর্যন্ত লড়বে।” — বলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান।
তিনি আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ম এবং বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে পদদলিত করতে দেওয়া হবে না।”
ট্রাম্পের আশাবাদী মন্তব্য
হোয়াইট হাউসে এক বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন,
“চীন একটি চুক্তি করতে চায়, তবে কীভাবে করবে তা বুঝে উঠতে পারছে না।”
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইতিবাচক পদক্ষেপ
এদিকে, ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লায়েন জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) নিজস্ব প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখবে, ট্রাম্পের পদক্ষেপের সঙ্গে মিল রেখে।
“আমরা আলোচনাকে সুযোগ দিতে চাই।” — বলেন ভন ডার লায়েন।
তিনি আরও বলেন, “বাণিজ্য ও সরবরাহ চেইনের জন্য সুস্পষ্ট ও পূর্বাভাসযোগ্য শর্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”