
দীর্ঘ এক বছরের কারাবাসের পর অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরেছেন রাশিয়ায় আটক রুশ-মার্কিন ব্যালে তারকা কসেনিয়া কারেলিনা। বৃহস্পতিবার রাতে মেরিল্যান্ডের Joint Base Andrews-এ অবতরণের পর কসেনিয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
একটি ভিডিও বার্তায় কসেনিয়া বলেন, “মিস্টার ট্রাম্প, আমাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আমি আপনার কাছে অশেষ কৃতজ্ঞ। আমি কখনও এত গর্বিত হইনি আমেরিকান হতে। আমি খুবই খুশি।” প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেই ভিডিওটি Truth Social-এ শেয়ার করে লেখেন, “Glad to have you back home.”
প্রেমিকের সঙ্গে আবেগঘন পুনর্মিলন
যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখার পর প্লেন থেকে নামতেই কসেনিয়া তাঁর প্রেমিক, বক্সার ক্রিস ভ্যান ডিরডেন-এর সঙ্গে আবেগঘন আলিঙ্গনে মিলিত হন। এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, তাঁকে Post Isolation Support Activities (PISA) প্রোগ্রামে অংশ নিতে দেওয়া হবে—যেটি বিদেশে অন্যায়ভাবে বন্দিদের পুনরায় সামাজিকভাবে খাপ খাইয়ে নিতে সহায়তা করে।
কীভাবে মুক্তি পেলেন কসেনিয়া?
রাশিয়া কসেনিয়াকে মুক্তি দেয় জার্মান-রুশ নাগরিক আর্থার পেট্রোভ-এর বিনিময়ে। পেট্রোভকে ২০২৩ সালে সাইপ্রাসে গ্রেপ্তার করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে। তাঁর বিরুদ্ধে সেন্সিটিভ মাইক্রোইলেক্ট্রনিকস রপ্তানির অভিযোগ ছিল।
কারাবাসের কারণ
২০২৪ সালের শুরুর দিকে মাত্র $51.80 ইউক্রেনীয় একটি দাতব্য সংস্থায় অনুদান দেওয়ার দায়ে রাশিয়া তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেয়। প্রথমে তাঁকে “petty hooliganism” অভিযোগে আটক করা হয়েছিল। রাশিয়া দাবি করে, কসেনিয়া যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে ইউক্রেনকে সমর্থন করে “পাবলিক অ্যাকশন”-এ অংশ নিয়েছিলেন।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক্স (Twitter)-এ লিখেছেন, “আমেরিকান কসেনিয়া কারেলিনা এখন বাড়ি ফেরার পথে। তিনি রাশিয়ায় অন্যায়ভাবে আটক ছিলেন এক বছরের বেশি সময় ধরে, এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর মুক্তি নিশ্চিত করেছেন।”
আগের বন্দি বিনিময় থেকে বাদ পড়েছিলেন
২০২৪ সালের আগস্টে বড় এক বন্দি বিনিময়ের সময় কারেলিনার নাম তালিকায় ছিল না। তখন মুক্তি পেয়েছিলেন WSJ-এর সাংবাদিক ইভান গেরস্কোভিচ, প্রাক্তন মেরিন পল হুইলান, এবং সাংবাদিক আলসু কুরমাশেভা। তবে এবার ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্যোগে তিনি মুক্তি পান।
ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে আরও বন্দিমুক্তি
এটি ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে বিদেশে আটক কোনো মার্কিন নাগরিককে মুক্ত করার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ। এর আগে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া থেকে মুক্ত করা হয় আমেরিকান শিক্ষক মার্ক ফগেল-কে, যিনি ২০২১ সাল থেকে বন্দি ছিলেন।