
গ্রিনল্যান্ডের পিটুফিক স্পেস বেস-এ নিযুক্ত মার্কিন স্পেস ফোর্সের কমান্ডার কর্নেল সুজানাহ মেয়ার্সকে বরখাস্ত করেছে পেন্টাগন। ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সাম্প্রতিক সফরের পর তার মন্তব্যকে ঘাঁটির অবস্থানের সঙ্গে অমিল বলে উল্লেখ করায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
৩১ মার্চ, ঘাঁটির সদস্যদের কাছে এক ইমেইলে কর্নেল মেয়ার্স লেখেন, “বর্তমান রাজনীতির বিষয়গুলো আমি পুরোপুরি বুঝি না, তবে আমি জানি ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স শুক্রবার যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তা পিটুফিক স্পেস বেসের প্রতিফলন নয়।” তিনি আরও লেখেন, “আমি পুরো সপ্তাহান্ত ধরে ভাবছি, শুক্রবার কী বলা হয়েছে, কী করা হয়েছে এবং সেটা আপনাদের ওপর কী প্রভাব ফেলেছে।”
এই ইমেইলের প্রতিবেদন প্রথম প্রকাশ করে Military.com। এরপর স্পেস ফোর্স এক বিবৃতিতে জানায়, “নেতৃত্বে আস্থার অভাব” উল্লেখ করে কর্নেল মেয়ার্সকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, “একজন কমান্ডারের কাছ থেকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা এবং উচ্চতম নৈতিক মান বজায় রাখাই প্রত্যাশিত।”
পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল এক্স-এ (সাবেক টুইটার) বলেন, “চেইন অব কমান্ডকে অবমূল্যায়ন বা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতিকে ব্যাহত করার যে কোনো চেষ্টা প্রতিরক্ষা বিভাগে সহ্য করা হবে না।”
বর্তমানে কর্নেল শন লি দায়িত্ব নিয়েছেন বলে জানিয়েছে স্পেস ফোর্স।
মার্কিন রাজনৈতিক মহলে প্রশংসা
ঘটনার পর রিপাবলিকান সিনেটর টমি টিউবারভিল (আলাবামা), এরিক শমিট (মিসৌরি) এবং জিম ব্যাংকস (ইন্ডিয়ানা) কর্নেল মেয়ার্সের বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে এক্স-এ পোস্ট করেছেন। জিম ব্যাংকস বলেন, “কর্নেল মেয়ার্স স্পেস ফোর্সকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন, এবং তাঁকে জবাবদিহি করা হয়েছে।”
ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্সের মন্তব্য
ভান্স তার সফরের সময় ডেনমার্কের সমালোচনা করে বলেন, “ডেনমার্ক গ্রিনল্যান্ডবাসীদের সঙ্গে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকের মতো আচরণ করেছে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, ডেনমার্ক চীন ও রাশিয়ার হুমকি থেকে গ্রিনল্যান্ডকে নিরাপদ রাখতেও ব্যর্থ হয়েছে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ভাইস প্রেসিডেন্ট ভান্স হচ্ছেন গ্রিনল্যান্ডের পিটুফিক ঘাঁটিতে সফর করা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পদমর্যাদার কর্মকর্তা।
ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান
গ্রিনল্যান্ড নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান পরিষ্কার করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “আমাদের গ্রিনল্যান্ড দরকার, আর বিশ্বকেও দরকার যেন আমাদের ওখানে উপস্থিতি থাকে। ডেনমার্ককেও বোঝা উচিত, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের সেখানে থাকা প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যতদূর যেতে হবে যাব। কারণ গ্রিনল্যান্ড ছাড়া আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্ভব নয়।”