
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এখনো রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় থাকলেও, তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে চলছে তীব্র জল্পনা। ২০২৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর পদে নির্বাচন করবেন, নাকি ২০২৮ সালে আবার হোয়াইট হাউসের পথে হাঁটবেন— এই প্রশ্ন এখন ডেমোক্র্যাটিক শিবিরে আলোচনার কেন্দ্রে।
সম্প্রতি একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে দৃঢ় বার্তা দিয়েছেন হ্যারিস। এক পোস্টে তিনি লেখেন, “আজ আমাদের দেশজুড়ে আমেরিকানরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে।” আরেকটিতে তিনি উল্লেখ করেন, “কোনো নিযুক্ত ধনকুবেরের চেয়ে কর্মজীবী মানুষের কণ্ঠই শক্তিশালী।”
তবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম তিন মাসে নেয়া বিতর্কিত নীতিমালার বিরুদ্ধে যতটা আওয়াজ উঠেছে, হ্যারিস তার তুলনায় অনেকটাই নীরব। তিনি এখনো কোনো টেলিভিশন সাক্ষাৎকার, পডকাস্ট বা বড় র্যালিতে অংশ নেননি। তবে প্রতিটি প্রকাশ্য মন্তব্যই গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে।
গভর্নর পদপ্রার্থী হিসেবে জল্পনা
কমলা হ্যারিসের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র Fox News Digital-কে জানিয়েছে, তিনি গ্রীষ্মের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর পদে লড়বেন কি না। যদিও গভর্নর পদে আগ্রহী অন্য প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন:
প্রাক্তন লস অ্যাঞ্জেলেস মেয়র আনটোনিও ভিয়ারাইগোসা,
সাবেক কংগ্রেসওম্যান কেটি পোর্টার,
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জ্যাভিয়ের বেসেরা।
ভিয়ারাইগোসা হ্যারিসকে উদ্দেশ করে বলেন, “ক্যালিফোর্নিয়া কোনো উচ্চপদে যাওয়ার সিঁড়ি নয়। এখনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া একজন প্রার্থীকে নিয়ে আমরা বসে থাকতে পারি না।”
তবে এগিয়ে আছেন হ্যারিস
জনমত জরিপ অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ক্যালিফোর্নিয়া গভর্নর নির্বাচনে অংশ নিলে কমলা হ্যারিস অন্য প্রার্থীদের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকবেন। এমনকি লেফটেন্যান্ট গভর্নর এলেনি কৌনালাকিস পর্যন্ত ইঙ্গিত দিয়েছেন, হ্যারিস প্রার্থী হলে তিনি সরে দাঁড়াবেন।
আবারও হোয়াইট হাউসে?
অন্যদিকে, ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্সি নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় হ্যারিস রয়েছেন শীর্ষে। প্রাথমিক জরিপে তিনি অন্যান্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের তুলনায় নাম পরিচিতির কারণে বেশ এগিয়ে রয়েছেন।
তবে হ্যারিস যদি ২০২৬ সালে গভর্নর হন, তাহলে একই সঙ্গে প্রেসিডেন্সি দৌড়ে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া
হ্যারিসকে নিয়ে আশ্চর্যজনকভাবে সহানুভূতিশীল মন্তব্য করেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। এক পডকাস্টে তিনি বলেন, “ওকে দাঁড়াতে দিন। তবে একটা জিনিস করতে হবে— তাকে ইন্টারভিউ দেওয়া শুরু করতে হবে।”
অতীত অভিজ্ঞতা
কমলা হ্যারিস অতীতে সান ফ্রান্সিসকোর ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি, ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ও যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২০ সালে জো বাইডেনের রানিং মেট হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। কমলা হ্যারিস যাচ্ছেন কোথায়— ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর ভবনে, নাকি আবার হোয়াইট হাউসের পথে? উত্তর মিলবে ২০২৫ সালের গ্রীষ্মেই। তবে এখনই স্পষ্ট— তিনি “কোথাও যাচ্ছেন না।” বরং রাজনীতির মঞ্চে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে ফিরে আসছেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট।