
গাজায় ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের ৭৭ বছরের বাস্তুচ্যুতির স্মরণে বিশ্বজুড়ে লাখো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার সময় ইহুদি মিলিশিয়াদের হাতে ফিলিস্তিনিদের জাতিগত নির্মূলের ঘটনাকে ফিলিস্তিনিরা ‘নাকবা’ (দুর্যোগ) নামে স্মরণ করে থাকে।
নাকবার ফলে লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনি স্থায়ীভাবে তাদের নিজভূমি থেকে উচ্ছেদ হন। আন্দোলনকারীরা বলছেন, আজ গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে সেই ইতিহাসই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
স্টকহোম, সুইডেন:
ওডেনপ্লান স্কয়ারে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়ে গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়েছেন, নিহত শিশুদের ছবি প্রদর্শন করেছেন এবং ব্যানারে লিখেছেন— “প্যালেস্টাইনে জায়নিস্ট সরকারের গণহত্যা বন্ধ করো।” অনেকের হাতে গাজায় নিহত বেসামরিক নাগরিকদের নামসহ প্ল্যাকার্ড ছিল।
লন্ডন, যুক্তরাজ্য:
শত-সহস্র মানুষ ডাউনিং স্ট্রিটের দিকে মিছিল করেছেন। তারা বলছেন, গাজায় ইসরায়েল যে গণহত্যা চালাচ্ছে তা ৭৭ বছর আগের নাকবারই আধুনিক সংস্করণ। বিক্ষোভকারীরা “গাজায় গণহত্যা বন্ধ করো”, “ফ্রি প্যালেস্টাইন”, “ইসরায়েল একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র”—এমন সব স্লোগান দিচ্ছিলেন। তারা গাজা অবরোধের নিন্দা করে বলেন, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে ২০ লাখ মানুষকে না খাইয়ে মারছে। যুক্তরাজ্য সরকারকে এই মানবিক বিপর্যয়ে রাজনৈতিক ও সামরিকভাবে ইসরায়েলের সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বার্লিন, জার্মানি:
পটসডামার প্লাটজে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীরা “তোমার নীরবতাই সহঅপরাধ”, “তোমরা আমাদের সবাইকে হত্যা করতে পারবে না”—এমন স্লোগান সম্বলিত পোস্টার বহন করেন। ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিহিত নারীরা নাকবা-বিষয়ক চিত্র প্রদর্শন করেন। এই আয়োজন ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার ছিল এবং অন্তত তিনজনকে আটক করা হয়।
এথেন্স, গ্রিস:
ফিলিস্তিনি পতাকা এবং কেফিয়াহ পরিহিত বিক্ষোভকারীরা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি দূতাবাস পর্যন্ত মিছিল করেন।
এই বিক্ষোভগুলো এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন গত কয়েক দিনে ইসরায়েল গাজায় নতুন স্থল অভিযান চালিয়ে শত শত ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। ১৯৪৮ সালের নাকবার বার্ষিকীতে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে স্টকহোমসহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।