
সুইডেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির হাজার হাজার মানুষ শনিবার রাস্তায় নেমে নিজেদের সরকারের নীরবতার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন—যেখানে তারা গাজার উপর ইসরায়েলের দখলদারিত্ব ও সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ ও তেল আবিবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দাবি করেছেন, বলে জানায় আনাদোলু এজেন্সি।
স্টকহোমে বিক্ষোভ:
সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের ওডেনপ্লান স্কয়ারে শত শত মানুষ জড়ো হন। বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনের আহ্বানে আয়োজিত এই বিক্ষোভে তারা সুইডিশ সরকারকে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান।
বিক্ষোভকারীরা সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিকে পদযাত্রা করেন এবং “ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা চাই”, “নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করো” ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সুইডিশ সমাজকর্মী লার্স ওহলি আনাদোলুকে বলেন, “ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের গণহত্যার সময় সুইডেনের নীরব থাকা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।” তিনি জানান, ইতোমধ্যেই ৫০,০০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৫,০০০-এরও বেশি শিশু রয়েছে। তিনি গাজায় জাতিগত নিধন ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সুইডেন সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
প্যারিসে বিক্ষোভ:
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বুরস স্কয়ারে ফিলিস্তিনপন্থীরা একত্রিত হয়ে ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং গাজায় মানবিক সহায়তা অবাধ প্রবেশের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
তীব্র খাদ্য সংকট তুলে ধরতে বিক্ষোভকারীরা খালি হাঁড়ি-পাতিল বাজিয়ে স্লোগান দেন—“ইসরায়েল হত্যাকারী, ম্যাক্রোঁ সহযোগী”, “গাজায় গণহত্যা চলছে, আমরা চুপ থাকব না।”
৪৪ বছর বয়সী মাইরিয়েম আনাদোলুকে বলেন, তিনি ফরাসি সরকারের অবস্থানের প্রতিবাদ জানাতে এবং ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগে একাত্মতা প্রকাশ করতেই বিক্ষোভে এসেছেন। তিনি গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বিধিনিষেধকে “অমানবিক” ও “কেলেঙ্কারি” হিসেবে বর্ণনা করেন এবং তাত্ক্ষণিক গণজাগরণের আহ্বান জানান।
বার্লিনে বিক্ষোভ:
জার্মানির বার্লিন শহরের ওরানিয়েনপ্লাটজে প্রায় ১,০০০ মানুষ গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভে অংশ নেন।
তারা “ফিলিস্তিনের মুক্তি চাই,” “জার্মানি অর্থ দেয়, ইসরায়েল বোমা ফেলে,” “ইসরায়েল একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র,” “গণহত্যা বন্ধ করো”—এই স্লোগানগুলো দেন।
বিক্ষোভ চলাকালে বক্তারা বলেন, “কোনো ব্যক্তি বা রাষ্ট্রের অধিকার নেই একটি পুরো জাতিকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার, উচ্ছেদ করার বা হত্যা করার।” উল্লেখযোগ্যভাবে, কিছু ইহুদি বংশোদ্ভূত জার্মান নাগরিকও এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করে সমর্থন জানান।