
বদর, সিফফিন ও কারবালা একই সূত্রে গাঁথা
ইসলামের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয় বদর প্রান্তে কুরাইশ বংশের মদিনার বনু হাশিম গোত্রের মোহাম্মদ সাঃ এবং মক্কার কুরাইশ নেতা আবু জাহেল এর মধ্যে।
ধর্ম ডেস্ক :
২ হিজরির ১৭ রমজান তারিখে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ইসলামের ইতিহাসে এটি প্রথম প্রধান যুদ্ধ।
এতে জয়ের ফলে মুসলিমদের ক্ষমতা পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পায়।
বদর যুদ্বে ৩১৩জন মুসলিমের মধ্যে ৩১২জন মিলে ৩৪ জন শত্রুসেনা হত্যা করে ছিলেন।
আর ইমাম আলী আঃ একাই হত্যা করেছেন ৩৬ জন কুরাইশ পৌত্তলিক।
মওলা আলী আঃ কর্তৃক নিহত এই ৩৬ জনের অধিকাংশ ছিলো কুরাইশ বংশের বনু উমাইয়া গোত্রের।
এই যুদ্ধে আবু জাহেলের মৃত্যুর পর বনু উমাইয়া গোত্রের নেতা আবু সুফিয়ান মক্কার কুরাইশদের নেত্রিত্বে আসেন। আবু সুফিয়ান নেত্রিত্বে আসার পর থেকেই উমাইয়ারা বনু হাশিম গোত্রের চাঁদ হযরত মোহাম্মদ সা, হযরত আমির হামজা রাঃ ও হযরত আলী ইবনে আবু তালিব আঃ ইত্যাদি উনাদের উপর ক্ষিপ্ত হতে থাকেন এবং ঘোরতম শত্রুতে পরিনত হন।
বদরের যুদ্ধে হযরত আলী ইবনে আবু তালিব আঃ একাই ৩৬ জন হত্যা করেছিল যাদের অধিকাংশ ছিলো উমাইয়া গোত্রের।
এজন্য তখন থেকেই উমাইয়া গোষ্ঠী হযরত মওলা আলী আঃ এর সাথে ঘোরতম শত্রুতা শুরু করে।
উমাইয়ারা আলীবংশের উপর স্টিল রোলার চালনা শুরু করে।
যার ফলশ্রতিতে পরবর্তীতে উমাইয়া নেতা মুয়াবিয়ার সাথে হযরত আলী আঃ এর সিফফিনের যুদ্ধ এবং উমাইয়া নেতা ইয়াজিদের সাথে হযরত ইমাম হুসাইন আঃ এর কারবালার যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
এককথায় বদর প্রান্ত থেকেই বনু উমাইয়া গোত্রের নেতারা বনু হাশিম গোত্রের মোহাম্মদ সাঃ ও হযরত আলী আঃ এর ঘোরতম শত্রু। এই উমাইয়া গোষ্ঠী কোনকালেই হযরত মোহাম্মদ সাঃ ও হযরত আলী আঃ এর সুচোখে দেখেনি। ইসলামের ঘোরতম শত্রু। যার ফলশ্রতিতে সিফফিন ও কারবালা সংঘটিত হয়।
নবীবংশ ও আলী বংশ ধ্বংসের মুল হোতা হচ্ছে উমাইয়া গোষ্ঠীর লোভী শাসকেরা। হযরত আলী আঃ, হযরত ইমাম হাসান আঃ, হযরত ইমাম হুসাইন আঃ, হযরত ইমাম জয়নুল আবেদিন আঃ সহ নবীবংশের এগারজন ইমাম একে একে এই উমাইয়া রাজা বাদশাহ কর্তৃক শাহাদত বরণ করেছেন।
এজন্য বলা হয়, বদর যুদ্ধের বদলা উমাইয়া গোষ্ঠী কারবালায় হযরত ইমাম হুসাইন আঃ এর শাহাদতের মাধ্যমে নিয়েছেন।
হজরত ইমাম হোসাইন আঃ এর পবিত্র মাথা ইয়াজিদের দরবারে আনা হয়। ইয়াজিদের হাতে একটি লাঠি বা ছড়ি ছিল। এটা দিয়ে সে ইমামের পবিত্র ঠোঁটে নাড়াচাড়া করছিল এবং নিজের দম্ভ প্রকাশ করছিল। তখন সে বলছিল, আহা যদি আজ আমার পিতা ( মুয়াবিয়া ) বেঁচে থাকতেন, তাহলে তিনি দেখতে পেতেন, আমি বনি হাশিমের ( কুরাইশদের দুটি শাখা, উমাইয়া ও হাশেমী) কী হাল করেছি। তাদের বংশকে নির্মূল করে দিয়েছি।
হাশিম গোত্র এবং নবীবংশের চিরশত্রু হচ্ছে যুগে যুগে উমাইয়া শাসকগণ। আর উমাইয়া শাসকগণ তাদের অপরাধ অপকর্ম ঢাকতে গিয়ে ইসলামকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেছেন। ইসলামের নীতি আদর্শ কবর রচনা করে যুগে যুগে উমাইয়া শাসকগণ তাদের নীতি আদর্শকে ইসলাম হিসাবে চালিয়ে দিয়েছেন।
এজন্য মুসলিম সমাজে ফেরকাবাজি, দলবাজি ও গ্রুপিং এর মুল হোতাই হচ্ছে এই উমাইয়া গোষ্ঠী। এই সত্য ইতিহাস অধিকাংশ মুসলিম অবগত নন। ইসলামি ইতিহাস সত্যি বেদনাদায়ক ও মর্মাথক।