
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে আগামীকাল, বুধবার (৪ জুন)। সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ধর্মীয় আদালত জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার পর ৪ জুন থেকে হজের কার্যক্রম শুরু হওয়ার ঘোষণা দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় লক্ষ লক্ষ মুসলিম হজযাত্রী রওনা হবেন মিনা প্রান্তরের দিকে—যেখানে শুরু হবে তাদের আত্মশুদ্ধির এবাদতপর্ব।
আগামীকাল হজযাত্রীরা ইহরাম বেঁধে মিনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। ইসলামী শরিয়তে এটি সুন্নতের পর্যায়ে থাকলেও, এতে নিহিত রয়েছে অপার তাৎপর্য। মিনায় পৌঁছার পর হাজিরা জোহরের নামাজ আদায় করবেন এবং রাতযাপনসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন। প্রতিটি নামাজ, প্রতিটি মুহূর্ত এখানে পরিণত হয় হৃদয়ের গভীর আরাধনায়।
২০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই মিনা উপত্যকা এখন পরিণত হয়েছে একটি ভ্রাম্যমাণ নগরীতে। বিশাল তাঁবুগুলো—যা বছরের অন্যান্য সময় গুটিয়ে রাখা হয়—এখন দিগন্তজোড়া ছাউনির মতো হাজিদের আশ্রয় দিচ্ছে। প্রতিটি তাঁবুতে রয়েছে নম্বর, আধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং নির্দিষ্ট এজেন্সির তত্ত্বাবধানে খাবার সরবরাহের সুব্যবস্থা।
এখানে প্রতিটি মুহূর্তের গুরুত্ব অপরিসীম। হাজিদের মুখে মুখে চলছে তালবিয়া—”লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক”—এই পবিত্র ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে মিনার প্রতিটি কোণা। অনর্থক গল্পগুজব কিংবা ব্যস্ততা নয়, বরং এখানে সময় কাটে জিকির, কোরআন তিলাওয়াত ও আত্মসমালোচনায়।
এই মিনাই যেন হজযাত্রীদের জন্য এক প্রশিক্ষণশিবির—নতুন জীবনের, নতুন প্রতিজ্ঞার, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের এক অনন্য সুযোগ।
পরদিন, অর্থাৎ ৫ জুন পালিত হবে ইয়াওমে আরাফা—যা হজের মূল দিবস হিসেবে বিবেচিত। মিনার প্রস্তুতির পর আরাফার ময়দানের দিকে যাত্রা করবেন হাজিরা। সেখান থেকেই শুরু হবে ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের চূড়ান্ত ধাপ।