
ড. ইউনুস গত বছরের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরবর্তী সময় থেকে অস্থায়ী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের ও বাংলাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক যোগাযোগ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ব্যাংককের ৬ষ্ঠ বিমস্টেক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
বাংলাদেশি মিডিয়ার মতে, এই বৈঠক ঢাকার পক্ষ থেকে পরস্পর সম্পর্কের উত্তেজনা কমাতে এবং ইউনুসের শাসনে সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতার ব্যাপারে ভারতের উদ্বেগের সমাধান করতে অনুরোধ করা হয়েছিল। এই বৈঠক ইউনুসের চীনে সফরের পর অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তিনি ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলকে “ল্যান্ডলকড” (ভূ-নির্ধারিত) বলে মন্তব্য করেন এবং বাংলাদেশকে ওই অঞ্চলের “সাগরের প্রবেশাধিকার রক্ষক” হিসেবে উপস্থাপন করেন। ইউনুসের এই মন্তব্য ভারতের নেতাদের তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি করে, যার ফলে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর বঙ্গোপসাগরের বহু-বিভাগীয় প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা (বিমস্টেক) উদ্যোগে ভারতের কৌশলগত ভূমিকার উপর গুরুত্ব দেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদির ৪টি বড় বার্তা: ১. প্রস্তুতিমূলক সম্পর্ক তৈরি করুন: প্রধানমন্ত্রী মোদী ইউনুসকে জানান, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গঠন করতে হলে প্ররোচনামূলক বক্তব্য না দিয়ে বাস্তবধর্মী এবং ফলপ্রসূ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।
২. সীমান্ত নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা: ভারতের প্রধানমন্ত্রী সীমান্ত নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং অবৈধ সীমান্ত অতিক্রম বন্ধ করার উপর গুরুত্ব দেন।
৩. সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা: প্রধানমন্ত্রী মোদী বাংলাদেশে সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশী প্রতিনিধিকে জানান যে, হিন্দুদের উপর নির্যাতনের বিষয়গুলো গভীরভাবে তদন্ত করা উচিত।
৪. গঠনমূলক আলোচনা: প্রধানমন্ত্রী মোদী দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী এবং উপকারী সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে সরাসরি এবং গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে পারস্পরিক উদ্বেগ সমাধান করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী মোদী এক টুইটে লেখেন, “ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে গঠনমূলক ও জনগণের উপকারে কেন্দ্রীভূত সম্পর্কের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
তিনি আরও লেখেন, “বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা, অন্তর্ভুক্তি এবং গণতন্ত্রের প্রতি ভারতের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি। অবৈধ সীমান্ত অতিক্রম প্রতিরোধের ব্যবস্থা এবং হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও ভালোর জন্য আমাদের গুরুতর উদ্বেগের কথা আলোচনা করেছি।”