
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের “ভালো সম্ভাবনা” রয়েছে। বিশ্বজুড়ে মার্কিন বাণিজ্য নীতিতে বড় পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে এ মন্তব্য করেছেন তিনি।
সোমবার UnHerd ওয়েবসাইটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভ্যান্স বলেন, “আমরা কিয়ার স্টারমারের সরকার সঙ্গে খুব আন্তরিকভাবে কাজ করছি। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক বেশি পারস্পরিক, তাই একটি চুক্তি করা অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের তুলনায় সহজ হবে।”
যুক্তরাজ্যের পণ্যে ১০% শুল্ক, তবুও চুক্তির আশাবাদ
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি মাসের ২ এপ্রিল ‘লিবারেশন ডে’ ঘোষণার সময় যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ প্রায় সব অংশীদার দেশের আমদানির ওপর ১০ শতাংশ বেসলাইন শুল্ক আরোপ করেন। এর ফলে বিশ্ববাজারে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দেয়, এবং মার্কিন শেয়ারবাজার থেকে ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদ হারিয়ে যায়।
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরবর্তীতে কিছু ছাড় দেওয়া হয় এবং সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে।
যুক্তরাজ্যের সরকারসূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলাপ আলোচনা ভালোভাবেই এগোচ্ছে। এই চুক্তিটি শুধু শুল্ক হ্রাসেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং পণ্য ও সেবাখাতে পারস্পরিক সহযোগিতার উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠবে।
সেমিকন্ডাক্টর ও ওষুধ খাতেও শুল্ক ছাড় শেষ হতে পারে
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই সেমিকন্ডাক্টর এবং ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের ওপর ‘জাতীয় নিরাপত্তা’ ভিত্তিক তদন্ত শুরু করেছে, যার ফলে এসব খাতেও শুল্ক ছাড় শেষ হয়ে যেতে পারে।
ভ্যান্স বলেন, “নতুন শুল্ক ব্যবস্থা চালু হলে বাজারে অস্থিরতা দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এটিকে দীর্ঘমেয়াদি কৌশল হিসেবে দেখছেন।” তিনি আরও বলেন, “আমরা বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চাই — সব ক্ষেত্রেই।”
ইউরোপ ও ইউক্রেন প্রসঙ্গে ভ্যান্স
সাক্ষাৎকারে ভ্যান্স ইউরোপ নিয়ে নিজের ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন, যদিও সাম্প্রতিক এক ব্যক্তিগত আলোচনায় ইউরোপ নিয়ে কিছু বিতর্কিত মন্তব্য ফাঁস হয়।
“আমি ইউরোপীয় জনগণকে ভালোবাসি। আমেরিকান সংস্কৃতিকে ইউরোপীয় সংস্কৃতি থেকে আলাদা করা যায় না,” বলেন ভ্যান্স।
তিনি আরও বলেন, “ইউরোপ যদি নিরাপত্তার জন্য সবসময় যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল থাকে, সেটা ইউরোপ এবং আমেরিকা — উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।”
ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ প্রসঙ্গে ভ্যান্স বলেন, “একটি যুদ্ধ শেষ করতে হলে দুই পক্ষের কৌশলগত রেড লাইনগুলো বোঝা জরুরি। এটা মানে এই না যে আপনি রাশিয়ার আগ্রাসনের পক্ষে, বরং এটা বোঝার চেষ্টা করা — কে কী চাইছে।”