ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৩ এপ্রিল ২০২৫
  1. Global News
  2. অপরাধ
  3. অভিযোগ
  4. অর্থনীতি
  5. আইন-বিচার
  6. আটক
  7. আন্তর্জাতিক
  8. আবহাওয়া
  9. কৃষি-সংবাদ
  10. খেলা-ধুলা
  11. জাতীয়
  12. জীবনযাত্রা
  13. ধর্ম
  14. প্রবাস প্রযুক্তি
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কতটা ‘বরবাদ’ করতে পারলেন শাকিব খান?

বিনোদন ডেস্ক
এপ্রিল ৩, ২০২৫ ৫:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঢাকা : অভিনয় প্রসঙ্গে বলতে গেলে, সিনেমার প্রাণভোমরা শাকিব খান পরিণত অভিনয়ে আবারও বাজিমাত করেছেন। দেশের শীর্ষ নায়কের মেগা স্টারডমের যথাযথ ব্যবহার করে পর্দায় শাকিবকে স্টাইলিশভাবে উপস্থাপন করেছেন পরিচালক।

কথায় আছে, পাপ নাকি বাপকেও ছাড়ে না। আদিব মির্জা ঠিক তেমনই একজন বাবা। এহেন অপকর্ম নেই, যেটা তিনি করেননি। এর মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন বিশাল সাম্রাজ্য, নিজেকে অধিষ্ঠিত করেছেন ক্ষমতা আর দাপটের শীর্ষে। তার ভয়ে থরথর করে কাঁপে সবাই। কিন্তু প্রভাবশালী আদিব মির্জারও দুর্বলতা আছে। সেটি হলো, তার একমাত্র ছেলে আরিয়ান মির্জা।

ছেলের জন্য সব করতে পারেন আদিব মির্জা। সব মানে, সব। ছেলেকে বাঁচাতে প্রয়োজনে একটার পর একটা খুনও করতে পারেন। কিন্তু আরিয়ান কি দুধে ধোয়া তুলসি পাতা?

স্কুলে থাকতেই আভাস পাওয়া গিয়েছিল, বড় হয়ে আরিয়ান কী হতে পারে! ক্লাসে বান্ধবীর সঙ্গে দুষ্টুমির শাস্তি দেওয়ায় সবার সামনে শিক্ষককে মেরে ফেলেছিলেন! সেই যে শুরু, বড় হতে হতে আদিব হয়ে উঠলেন উগ্র, মাদকাসক্ত, নারীলিপ্সু। যাকে সন্তান হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জা হয় তার মায়েরও!

আর সেই সন্তানই হচ্ছেন গল্পের নায়ক—শাকিব খান। যাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত বহুল আলোচিত সিনেমা ‘বরবাদ’। কিন্তু এই সিনেমায় শাকিব খান তথা আরিয়ান মির্জার চরিত্রটিই এমন যে, তাঁকে আসলে নায়ক বলা কতটা যৌক্তিক, সেই প্রশ্ন উঠতেই পারে!

বড়লোক বাবার বখে যাওয়া সন্তান আরিয়ানেরও একটা দুর্বলতা আছে—নিতু (ইধিকা পাল)। আর নিতুকে পাওয়ার জন্য আরিয়ান কী করতে পারে, সেটার বার্তা পাওয়া গিয়েছিল টিজারেই—‘নিতুরে না পাইলে আমি পুরা দুনিয়া বরবাদ কইরা দিতে পারি।’

দুনিয়া বরবাদ করতে গিয়ে আরিয়ান দাঁড়িয়ে যান পরিবারের বিরুদ্ধে, দেশের বিরুদ্ধে! শেষ পর্যন্ত আরিয়ান মির্জা কি দুনিয়া বরবাদ করতে পেরেছেন? নাকি নিজেই বরবাদ হয়েছেন? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতেই এগিয়েছে সিনেমার গল্প। আর সে গল্প পর্দায় দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন নবাগত পরিচালক মেহেদী হাসান হৃদয়।

সিনেমায় মারমার কাটকাট অ্যাকশন যেমন ছিল, তেমনি ছিল আবেগ আর এক্সট্রিম লাভ অবসেশনের দারুণ মিশেল। নিতুর প্রতি আরিয়ানের প্রেমের গল্প জমাট বাঁধতে বাঁধতেই শেষ হয় প্রথমার্ধ। তবে বিরতির ঠিক আগে এমন একটা টুইস্ট হাজির হয়, যা গল্পের মোড় পুরো ১৮০ ডিগ্রি কোণে ঘুরিয়ে দেয়! এতে দ্বিতীয়ার্ধ হয়ে ওঠে আরও প্রাণবন্ত, আরও উপভোগ্য।

অভিনয় প্রসঙ্গে বলতে গেলে, সিনেমার প্রাণভোমরা শাকিব খান পরিণত অভিনয়ে আবারও বাজিমাত করেছেন। দেশের শীর্ষ নায়কের মেগা স্টারডমের যথাযথ ব্যবহার করে পর্দায় শাকিবকে স্টাইলিশভাবে উপস্থাপন করেছেন পরিচালক।

বরবাদ–এ শাকিবের চরিত্রের দুটো দিক আছে। একটা পাগল প্রেমিক, আরেকটা উগ্র পশুর মতো প্রতিশোধপরায়ণতা! দুই ঘরানার মিশেলে নিজেকে দারুণভাবে মানিয়ে নিয়ে শাকিব যেন নিজেকেই ছাড়িয়ে গেছেন।

নিতু চরিত্রে ইধিকা ছিলেন ভালো বাছাই। এর আগে শাকিবের সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘প্রিয়তমা’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। তবে ‘প্রিয়তমা’র চেয়ে অনেক বেশি স্ক্রিনটাইম পেয়েছেন বরবাদ-এ। শাকিবের মতো ইধিকার চরিত্রেও আলাদা শেড আছে। আর সেটাতে ভালোভাবেই উতরে গেছেন ওপার বাংলার এ নায়িকা।

অন্যান্যদের মধ্যে বলতে গেলে আদিব মির্জা চরিত্রে পুরোপুরি ভিন্ন রূপে হাজির হয়েছেন মিশা সওদাগর। শাকিবের সহকারী হিসেবে শ্যাম ভট্টাচার্য ওরফে জিল্লু ছিলেন নিখুঁত। ইন্তেখাব দিনার, শহীদুজ্জামান সেলিম, ফজলুর রহমান বাবু ও মামুনুর রশিদের মতো অভিনেতারা যতক্ষণ পর্দায় ছিলেন, নিজেদের সেরাটা দিয়েছেন।

তবে আক্ষেপ থেকে যায় যীশু সেনগুপ্তকে নিয়ে। শাকিবের সঙ্গে যীশুর ফেস-অফ দেখতে মুখিয়ে ছিলেন দর্শকেরা। কিন্তু নেতিবাচক চরিত্রে শুরুতে কলকাতার এ অভিনেতাকে যতটা শক্তিশালী দেখানো হয়েছিল, শেষে এসে সেটা কেমন মলিন হয়ে গেছে! তবে যতটুকু সুযোগ পেয়েছেন, অভিনয়ে কমতি রাখেননি যীশু।

সিনেমাতে মোট ৬টি গান ছিল। এর মধ্যে গল্পের সঙ্গেই জুড়ে দেওয়া হয়েছে বেশির ভাগ। বিশেষ করে শেষদিকে ‘নিঃশ্বাস’ শীর্ষক গানটির যথাস্থানে প্রয়োগের প্রশংসা করতেই হয়। যদিও প্রথমার্ধে গানগুলোর প্রয়োগ যথাযথ মনে হয়নি। তবে গানগুলো শ্রুতিমধুর ছিল বটে।

পরিচালক সিনেমা মুক্তির আগে আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলে আসছিলেন, তাঁর গল্পে প্রধান উপজীব্য ভায়োলেন্স বা সহিংসতা। সে আত্মবিশ্বাসের কারণ পর্দায় ভালোভাবেই টের পাওয়া গেছে। সিনেমায় পর্যাপ্ত ভায়োলেন্স দেখানো হয়েছে। কিছু দৃশ্য দর্শকদের রীতিমতো গায়ে কাঁটা দিয়েছে। বাংলা সিনেমার অ্যাকশন দৃশ্য নিয়ে দর্শকদের অনেকদিনের যে অভিযোগ, বরবাদ তাতে প্রলেপ দেবে। সার্টিফিকেশন বোর্ডের কড়াকড়িতে কিছু সহিংস দৃশ্য অস্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, যেটা চোখে লেগেছে ভালোভাবেই। ভালোভাবে এডিট করে অন্যভাবে উপস্থাপন করা যেত।

নিজের চরিত্রে শাকিব ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তাঁর স্ক্রিন প্রেজেন্সের সময় যে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বা আবহসংগীত ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে চরিত্রের গভীরতা আরও বেড়েছে। নায়কের মতো নেতিবাচক চরিত্রগুলোর জন্যও আলাদা আবহসংগীতের ব্যবহার প্রশংসনীয়। তবে ঈগলের ডাকের অতিব্যবহার কানে লেগেছে।

এ ছাড়া সিনেমাটোগ্রাফি, কালার গ্রেডিং নিয়ে খুব বেশি প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। গল্পের প্রয়োজনে লোকেশনের ভিন্নতা, সেট ডিজাইনই বলে দেয়—বরবাদ একটি বড় বাজেটের সিনেমা!

গল্পে পর্যাপ্ত টুইস্ট থাকলেও ক্লাইম্যাক্স ছিল অনুমেয়। এ ছাড়া প্রথমার্ধে কিছু দৃশ্য অযথাই টেনে লম্বা করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পুলিশের সঙ্গে শাকিবের কার চেজিংয়ের দৃশ্যের দৈর্ঘ্য অনায়াসেই কমিয়ে দেওয়া যেত।

গল্পের গভীরতা কম, মনে রাখার মতো সংলাপ নেই—এমন আরও কিছু আক্ষেপ এবং কিছু অসঙ্গতি থাকলেও বরবাদ পুরোদস্তুর ‘এন্টারটেইনিং’ সিনেমা। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অ্যাকশন জনরায় নির্মিত অন্যতম সেরা কমার্শিয়াল সিনেমা। হলে বসে দেখার সময় বিরক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। কিছু দৃশ্যের উপস্থাপন এমনভাবে হয়েছে, দর্শক অবচেতন মনে হলেও হাততালি দিতে বাধ্য!

বলাই যায়, ছক্কা হাঁকিয়েছে বরবাদ। এখন সেই ছক্কায় বক্স অফিসও বরবাদ হয় কিনা, তাই এখন দেখার।

In addition to creating news on this site, we collect news from various news sites and publish it with relevant sources. Therefore, if you have any objections or complaints about any news, you are requested to contact the authorities of the relevant news site. It is illegal to use news, photographs, audio and video from this site without permission.