
পিটসবার্গ, পেনসিলভানিয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গ শহরতলিতে ইউএস স্টিলের একটি কারখানায় সফরকালে ঘোষণা দেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত স্টিলের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করবেন। এই পদক্ষেপকে তিনি বলছেন “যুক্তরাষ্ট্রের স্টিল শিল্প রক্ষার একটি প্রধান পদক্ষেপ”।
ট্রাম্প বলেন,
“আমরা এখন ২৫ শতাংশ ট্যারিফের ওপর আরও ২৫ শতাংশ যোগ করছি — মানে ৫০ শতাংশ শুল্ক হবে। এটি আমেরিকার স্টিল কারখানাগুলোকে সুরক্ষা দেবে।”
পরে তাঁর Truth Social প্ল্যাটফর্মে তিনি আরও জানান, অ্যালুমিনিয়ামের ওপরও এই বাড়তি শুল্ক প্রযোজ্য হবে, এবং এটি ৪ জুন থেকে কার্যকর হবে।
নিপ্পন চুক্তি নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান
ট্রাম্প তাঁর বক্তৃতায় ইউএস স্টিল ও জাপানের নিপ্পন স্টিল-এর মধ্যকার “পরিকল্পিত অংশীদারিত্ব”কেও স্বাগত জানান।
তিনি বলেন,
“আজ আমরা এক ব্লকবাস্টার চুক্তি উদযাপন করছি, যা নিশ্চিত করবে যে এই ঐতিহাসিক আমেরিকান কোম্পানি আমেরিকানই থাকবে।”
তিনি বলেন, চুক্তির আওতায় ইউএস স্টিলের সদরদপ্তর পিটসবার্গেই থাকবে, একজন আমেরিকান সিইও থাকবেন এবং বোর্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য হবেন আমেরিকান নাগরিক।
ট্রাম্প জানান,
“আমি চুক্তিকে অনুমোদন করেছি কারণ নিপ্পন একাধিকবার প্রস্তাব সংশোধন করে ফিরেছে। এখনো আমরা চূড়ান্ত চুক্তিটি দেখিনি, তবে আমি এটি অনুমোদনের প্রস্তুতিতে আছি।”
এই চুক্তিকে তিনি বলছেন ১৪ বিলিয়ন ডলারের একটি বিনিয়োগ, যা এক লক্ষেরও বেশি চাকরি রক্ষা করবে ও তৈরি করবে।
তিনি প্রতিশ্রুতি দেন:
কোনো ছাঁটাই হবে না
কোনো আউটসোর্সিং হবে না
ইউএস স্টিলের সকল শ্রমিক ৫,০০০ ডলার বোনাস পাবেন
কোম্পানির সমস্ত ব্লাস্ট ফার্নেস পূর্ণ ক্ষমতায় চালু থাকবে
“গোল্ডেন শেয়ার” ও প্রশাসনিক দৃষ্টিভঙ্গি
রিপাবলিকান সিনেটর ডেভিড ম্যাককরমিক জানান, নতুন চুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো “গোল্ডেন শেয়ার” ব্যবস্থা — যা যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে বোর্ড সদস্য অনুমোদনের ক্ষমতা দেবে এবং উৎপাদন হ্রাস ঠেকাবে।
তবে ইউএস স্টিল ও নিপ্পনের মিলিত প্রতিষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি মালিকানা থাকবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ইউনিয়নের আপত্তি
United Steelworkers (USW) ইউনিয়ন এই চুক্তির বিরোধিতা করেছে।
ইউনিয়ন সভাপতি ডেভিড ম্যাককোল বলেন:
“আমাদের মতামত নেওয়া হয়নি। গোল্ডেন শেয়ারের মত বিষয় এখনো অস্পষ্ট। প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবতার মধ্যে বিশাল ফারাক আছে।”
তারা মনে করে, নিপ্পনের প্রস্তাব শ্রমিকদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থানের স্বার্থে সন্দেহজনক।
চুক্তি না হলে ঝুঁকি বাড়বে
ইউএস স্টিল এর আগে জানিয়েছিল, চুক্তি না হলে তারা ব্লাস্ট ফার্নেস কার্যক্রম সীমিত করবে, যার ফলে হাজার হাজার কর্মসংস্থান ঝুঁকিতে পড়বে। কোম্পানিটি এমনকি সদরদপ্তর পিটসবার্গে থাকবে কি না, সে নিয়েও অনিশ্চয়তা প্রকাশ করেছে।
সংক্ষিপ্ত পরিসংখ্যান:
বর্তমান কর্মী সংখ্যা: ২২,০০০+
উত্তর আমেরিকায়: ১৪,০০০+
স্লোভাকিয়া: বাকিরাস