
গাজায় চলমান যুদ্ধ ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা করতে আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নির্ধারিত পশ্চিম তীর সফরে বাধা দেওয়ায় ইসরায়েলকে “চরমপন্থী ও শান্তির বিরোধী” বলে অভিযুক্ত করেছে সৌদি আরব।
রবিবার জর্ডানের রাজধানী আম্মানে জর্ডান, মিসর ও বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ বলেন,
“ইসরায়েলের এই সফরে বাধা প্রদান তাদের চরমপন্থার প্রতিফলন এবং যে কোনো শান্তিপূর্ণ প্রচেষ্টার প্রতি তাদের অস্বীকৃতি। এটি আমাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করার সংকল্পকে আরও দৃঢ় করে তুলেছে, যাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই ঔদ্ধত্যের বিরুদ্ধে সক্রিয় করা যায়।”
ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্ত আসে এমন এক সময়ে যখন মিসর, জর্ডান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (UAE) পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা পশ্চিম তীরের রামাল্লায় ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছিলেন। ইসরায়েল পশ্চিম তীরের আকাশ ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করে এবং শুক্রবার তারা ঘোষণা দেয় যে, এই সফরের অনুমতি তারা দেবে না।
ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা বলেন,
“ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ, যারা আজ পর্যন্ত ৭ অক্টোবরের গণহত্যার নিন্দা করেনি, তারা রামাল্লায় আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে একটি উসকানিমূলক বৈঠকের আয়োজন করছিল, যার উদ্দেশ্য একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রচার। ইসরায়েল এই সফরের সঙ্গে কোনোভাবেই সহযোগিতা করবে না।”
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সালের এই সফর সাম্প্রতিক সময়ে কোনো শীর্ষ সৌদি কর্মকর্তার প্রথম পশ্চিম তীর সফর হতে পারত।
জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আইমান সাফাদি বলেন,
“এই সফরে বাধা দিয়ে ইসরায়েল আবারও দেখাল যে তারা একটি ন্যায়সঙ্গত ও সমন্বিত আরব-ইসরায়েল মীমাংসার সব সম্ভাবনা ধ্বংস করছে।”
এদিকে, আগামী ১৭ থেকে ২০ জুন নিউ ইয়র্কে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের ইস্যুতে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যেটি যৌথভাবে আয়োজন করছে ফ্রান্স ও সৌদি আরব।
মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আবদেলআত্তি বলেন,
“এই সম্মেলনে গাজায় যুদ্ধবিরতির পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পূনর্গঠন পরিকল্পনা, এবং ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমিতে টিকে থাকার কৌশল নিয়ে আলোচনা হবে, যাতে ইসরায়েলের বাস্তুচ্যুতির কোনো পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়।”
উল্লেখ্য, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় দেশগুলোর পক্ষ থেকে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়ছে। তারা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে সমর্থন করে, যার আওতায় একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশাপাশি সহাবস্থানে থাকবে।