
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর ক্ষমতার ১৯তম সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সরাসরি সতর্ক করে বলেন এবং চীনের বিরুদ্ধে চলমান বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে কড়া মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার সকালে ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন,“পুতিন বুঝতেই পারছে না যে, আমি না থাকলে রাশিয়ার জন্য অনেক ভয়াবহ কিছু ঘটত—আমি বলছি, সত্যিই ভয়াবহ! সে আগুন নিয়ে খেলছে!”
রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপ-চেয়ারম্যান এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ ট্রাম্পের মন্তব্যের পাল্টা জবাব দেন। তিনি বলেন, “পুতিনকে নিয়ে ট্রাম্পের ‘আগুন নিয়ে খেলা’ এবং ‘ভয়াবহ কিছু ঘটবে’ এমন মন্তব্যের প্রসঙ্গে আমি কেবল একটি সত্যিকারের ভয়াবহ বিষয়ের কথাই জানি—তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। আশা করি, ট্রাম্প সেটার মানে বোঝেন!”
ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন সময়ে এসেছে যখন রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেইনের বিরুদ্ধে হামলা বাড়িয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে এই দ্বন্দ্ব থেকে কিছুটা দূরে রাখার চেষ্টা করছে।
তবে বুধবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, পুতিনের শান্তি আলোচনার টেবিলে আসার সময় সীমিত।
“আমরা দেখব, সে আমাদেরকে শুধু সময়ক্ষেপণ করাচ্ছে কিনা। যদি করে, তাহলে আমরা একদম ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাব। এটা প্রায় এক সপ্তাহ থেকে দেড় সপ্তাহ সময় নেবে,” বলেন ট্রাম্প।
এই সপ্তাহে আরও যা ঘটেছেঃ
শুল্ক, শুল্ক, এবং আবার শুল্ক
চীনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনার বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, বেইজিং তাদের সঙ্গে করা প্রাথমিক চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে।
চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশে নামাবে এবং চীনও মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনবে।
কিন্তু ট্রাম্প বলেন, চীন চুক্তির শর্ত মানেনি—যদিও তিনি নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।
“খারাপ খবর হলো, চীন—যা অনেকের জন্য আশ্চর্য নয়—পুরোপুরি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে,” শুক্রবার এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেন ট্রাম্প। “মিস্টার ‘নাইস গাই’ হওয়া গেল না!”
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ জেমিসন গ্রিয়ার CNBC-কে বলেন,
“যুক্তরাষ্ট্র তাদের অংশের কাজ করেছে, কিন্তু চীন খুব ধীর গতিতে চুক্তি বাস্তবায়ন করছে, যা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।”
অন্যদিকে, চীন যুক্তরাষ্ট্রকে নিজেদের ভুল সংশোধনের আহ্বান জানায়।
“চীন আবারও যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ভুল পদক্ষেপ সংশোধন, চীনের ওপর বৈষম্যমূলক বিধিনিষেধ বন্ধ এবং জেনেভার উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় গৃহীত সমঝোতা রক্ষা করার আহ্বান জানায়,” শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ।
‘গোল্ডেন ডোম’ সুরক্ষা পেতে চায় কানাডা?
কানাডাও ট্রাম্পের কথিত ‘গোল্ডেন ডোম’ প্রতিরক্ষা সিস্টেমের আওতায় আসতে পারে—যদি তারা যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হয়।
ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার আগ্রহ দেখিয়ে আসছেন, এমনকি গ্রিনল্যান্ড ও পানামা খাল কেনার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি লেখেন,
“আমি কানাডাকে বলেছি, যারা আমাদের অসাধারণ গোল্ডেন ডোম সিস্টেমের অংশ হতে চায়, যে তারা যদি আলাদা ও অসমান দেশ হিসেবে থাকে তবে এতে তাদের খরচ হবে ৬১ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু তারা যদি আমাদের প্রিয় ৫১তম রাজ্য হয়, তাহলে খরচ হবে শূন্য ডলার!”