ঢাকামঙ্গলবার , ২৯ অক্টোবর ২০২৪
  1. Global News
  2. অপরাধ
  3. অভিযোগ
  4. অর্থনীতি
  5. আইন-বিচার
  6. আটক
  7. আন্তর্জাতিক
  8. আবহাওয়া
  9. কৃষি-সংবাদ
  10. খেলা-ধুলা
  11. জাতীয়
  12. জীবনযাত্রা
  13. ধর্ম
  14. প্রবাস প্রযুক্তি
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

১৫ কোটি টাকা মূল্যের জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প, কোর্ট ফি স্ট্যাম্প উদ্ধারসহ প্রস্তুতকারী চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিবি*

GlobalNation
অক্টোবর ২৯, ২০২৪ ২:১৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

১৫ কোটি টাকা মূল্যের জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প, কোর্ট ফি স্ট্যাম্প উদ্ধারসহ প্রস্তুতকারী চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিবি*

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প এবং কোর্ট ফি স্ট্যাম্প প্রস্তুতকারী সিন্ডিকেটের চারজনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।

গ্রেফতারকৃতরা হলো-১। মোসাঃ হাজেরা বেগম (৫৫), ২। মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জীবন (৩১), ৩। মোঃ মাসুদ রানা (২৫) ও ৪। মোঃ আলীম শেখ (২৫)।

এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ১৪ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকার ৫০০, ২০০, ১০০, ৫০, ১০ টাকা মূল্যমানের সর্বমোট ৩৩,৭৫,৫০০ টি জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি এবং জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প বিক্রির নগদ এক লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া জাল স্ট্যাম্প তৈরিতে ব্যবহৃত দুটি ছাপা খানা জব্দ করা হয় এবং জাল স্ট্যাম্প তৈরিতে ব্যবহৃত ২০টি ডাইস, একটি ল্যাপটপ, একটি আয়রন মেশিন, একটি সেলাই মেশিন, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তিনটি মোবাইল ফোন, স্ট্যাম্প তৈরির কাজে ব্যবহৃত আঠার ২৫টি টিউব ও কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে জাল স্ট্যাম্প প্রেরণের আট পাতা স্লিপ উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (২৮ অক্টোবর ২০২৪) থেকে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর ২০২৪) পর্যন্ত ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

ডিবি সূত্র জানায়, গত ২৮ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় জনৈক মোঃ মোজাম্মেল হক ও রিপন মোল্লা পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মূল্যের জাল/নকল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প এবং কোর্ট ফি স্ট্যাম্প প্রস্তুত করে বাজারে বিক্রি করে আসছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে ২৮ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ দুপুর সাড়ে বারোটায় মতিঝিল থানাধীন ফকিরাপুল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আদিল মিয়ার গলিতে অবস্থিত রিপন মোল্লার ভাড়া করা গোডাউনের সামনে থেকে রিপন মোল্লার নিযুক্ত কর্মচারী মোঃ আলীম শেখকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় রিপন মোল্লার গোডাউন থেকে বিভিন্ন জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প এবং কোর্ট ফি স্ট্যাম্প ও জাল স্ট্যাম্প তৈরির ডাইস উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আলীম শেখকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, উদ্ধারকৃত ডাইস ও রেভিনিউ স্ট্যাম্প রিপন মোল্লা উক্ত গোডাউনে রেখেছে এবং তা দেখাশোনা করার জন্য তাকে নিযুক্ত করেছে। সে জানায়, উক্ত স্ট্যাম্প জনৈক জুয়েল রানা এর প্রিন্টিং প্রেস থেকে তার উপস্থিতিতে প্রিন্ট করা হয়েছে। সে আরও জানায়, বিজয় সরণির এয়ারপোর্ট রোড সুপার মার্কেটের ২য় তলায় রিপন মোল্লার একটি গোপন কারখানা এবং সাভার থানাধীন রাজফুলবাড়ী শোভাপুর এলাকায় আরও একটি গোপন প্রিন্টিং প্রেস রয়েছে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে জুয়েল রানার প্রেসে অভিযান চালিয়ে জুয়েল রানাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করলে সে কৌশলে পালিয়ে যায়। জুয়েল রানার ভাড়া করা প্রেস থেকে বিভিন্ন জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প , কোর্ট ফি স্ট্যাম্প এবং একটি প্রিন্টিং মেশিন জব্দ করা হয়। অতঃপর বিজয় সরণি এয়ারপোর্ট রোড সুপার মার্কেটের ২য় তলার দোকানে অভিযান পরিচালনা করে প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের জাল কোর্ট ফি স্ট্যাম্প, ডাইস ও জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প তৈরির আয়রন মেশিন জব্দ করা হয়। অন্যদিকে গোয়েন্দা পুলিশের আরেকটি টিম বিকাল ০৫:০০ ঘটিকার সময় সাভার থানাধীন শোভাপুর এলাকায় রিপন মোল্লার ভাড়া করা দোকানে অভিযান পরিচালনা করে জাল স্ট্যাম্প তৈরির একটি প্রিন্টিং মেশিনসহ বিপুল পরিমাণ জাল স্ট্যাম্প, কোর্ট ফি স্ট্যাম্প ও ডাইস উদ্ধার করে। পরবর্তীতে গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় একই দিন (২৮ অক্টোবর ) রাত ০৮:০০ ঘটিকার সময় মিরপুর মডেল থানাধীন মধ্য পাইকপাড়া এলাকার একটি বাসা থেকে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও হাজেরা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় হাজেরা বেগমের শোবার ঘর থেকে জাল স্ট্যাম্প তৈরির কাজে ব্যবহৃত একটি সেলাই মেশিন ও প্রায় ছয় কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তার স্বামী মোজাম্মেল হক উক্ত জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প এবং নন- জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প তৈরির মূল হোতা। সে, তার স্বামী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মিলে জাল স্ট্যাম্প তৈরির জন্য গোপনে তেজগাঁও এবং সাভার এলাকায় কারখানা স্থাপন করে যার মাধ্যমে অত্যাধুনিক প্রিন্ট করা হয়। সে অন্যান্য আসামীদের সহযোগিতায় বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, শিল্প কারখানা ও স্ট্যাম্প ভেন্ডরদের নিকট জাল স্ট্যাম্প সরাসরি এবং কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।

গ্রেফতারকৃত মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জীবনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে তার কথিত স্যানিটারি ব্যবসার আড়ালে তার পিতা ও পরিবারের অনান্য সদস্যদের নিয়ে জাল/নকল স্ট্যাম্প প্রস্তুত ও বিক্রির সাথে জড়িত । হাজেরা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, মিরপুর মডেল থানাধীন দক্ষিণ পাইকপাড়ার ২৭৪ নং বাসায় তার স্বামীর আরেকটি গোপন গোডাউন রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ওই দিন (২৮ অক্টোবর ) রাত ০৯:৪৫ ঘটিকার উক্ত গোডাউনে অভিযান চালিয়ে গোডাউনের ভেতর জাল স্ট্যাম্প তৈরির কাজে নিয়োজিত অবস্থায় মোঃ মাসুদ রানাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে পলাতক আসামী মোজাম্মেল হকের নিকট আত্মীয়। সে জাল স্ট্যাম্প প্রস্তুতের কারিগর হিসেবে কাজ করে এবং মোজাম্মেল হক এর ভাড়া করা গোডাউনে বসে জাল স্ট্যাম্প প্রস্তুত করে। পরবর্তীতে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী কুরিয়ার যোগে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে দেয়। উক্ত গোডাউন থেকে বিপুল পরিমাণ জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প এবং কোর্ট ফি স্ট্যাম্পসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

জাল স্ট্যাম্প তৈরির কৌশল সম্পর্কে গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা প্রথমে স্ট্যাম্প তৈরির কাগজ সংগ্রহ করে প্রচলিত স্ট্যাম্পের প্রতিটি স্পেশাল চিহ্নের আলাদা আলাদা ডাইস প্রস্তুত করে এবং তা বাবহার করে। পরবর্তীতে প্রিন্টিং প্রেসে ডাইস স্থাপন করে জাল স্ট্যাম্প প্রিন্ট করে। যে সকল লেখা বা চিহ্নে ফ্লোরোসেন্ট কালি ব্যবহার করে আসল স্ট্যাম্প তৈরি হয় সে সকল লেখা বা চিহ্নের জন্য আলাদা ডাইস তৈরি করে ফ্লোরোসেন্ট কালি ব্যবহার করে নকল স্ট্যাম্প প্রিন্ট করে। পরবর্তীতে বিশেষ কেমিক্যাল ব্যবহার করে আসল স্ট্যাম্পের মত ফিনিশিং প্রদান করে। অতঃপর সেলাই মেশিন দিয়ে প্রতিটি স্ট্যাম্পে বর্ডার দেওয়া হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা জানায়, তারা পলাতক আসামীদের সাথে পরস্পর যোগসাজশে প্রায় ৩/৪ বছর যাবৎ ঢাকা মহানগর এলাকায় বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে সরকারি রেভিনিউ স্ট্যাম্প, নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি স্ট্যাম্প তৈরির মেশিন ও সরঞ্জামসমূহ স্থাপন করে জাল স্ট্যাম্প, কোর্ট ফি স্ট্যাম্প তৈরি করে আসছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, তারা তাদের তৈরিকৃত জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি স্ট্যাম্প সমূহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, শিল্প প্রতিষ্ঠান ও স্ট্যাম্প ভেন্ডরদের নিকট সরবরাহ করে। এভাবে চক্রটি সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃতরাসহ এজাহার নামীয় আরও চারজন এবং অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও পলাতক অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রয়েছে।

In addition to creating news on this site, we collect news from various news sites and publish it with relevant sources. Therefore, if you have any objections or complaints about any news, you are requested to contact the authorities of the relevant news site. It is illegal to use news, photographs, audio and video from this site without permission.