
২০০৪ সালের ২১ আগস্টে আওয়ামী লীগের সমাবেশে সংঘটিত ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মামলার রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক।
তিনি বলেছেন, আদালতের রায়ে চার্জশিটকে ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করা হলেও কোনো পুনঃতদন্ত বা আসামিদের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এর ফলে মামলাটির বিচারিক প্রক্রিয়ায় একটি ‘আইনগত ভ্যাকুয়াম’ তৈরি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন।
আদালতের নির্দেশনা নিয়ে প্রশ্ন
ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক বলেন, “আদালত বলেছেন চার্জশিট ত্রুটিপূর্ণ। কিন্তু এটা বলে আদালত যেটা করতে পারতেন, আসামিদের ফের রিমান্ডে পাঠানো বা মামলার পুনঃতদন্তের নির্দেশনা দেওয়া। কিন্তু আদালত এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেননি।”
তিনি আরও বলেন, “ফলে এখন মনে হচ্ছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট কোনো ঘটনা ঘটেনি। কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে না। আদালত ঘটনাটিকে ধরে ফের তদন্তের কথা না বলায় এখানে আইনগত একটি শূন্যতা তৈরি হয়েছে।”
‘নো ওয়ান কিলড জেসিকা’-এর সঙ্গে তুলনা
ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক মামলার রায়কে বলিউডের আলোচিত সিনেমা ‘নো ওয়ান কিলড জেসিকা’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা একটা সিনেমা দেখি ‘নো ওয়ান কিলড জেসিকা,’ সেই সিনেমারই প্রতিফলন দেখি আমরা এই রায়ে। সেখানে যেমন অপরাধ সংঘটিত হওয়া সত্ত্বেও সঠিক বিচারের অভাব ছিল, এখানেও আমরা তেমন কিছু দেখছি।”
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে শুরু থেকেই রাজনৈতিক বিতর্ক ছিল। ব্যারিস্টার মাহবুব শফিকের মন্তব্য নতুন করে মামলাটির বিচারিক ও আইনি দিক নিয়ে আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
একটি পক্ষের দাবি, এ ধরনের রায়ে বিচারব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট হতে পারে। অন্যদিকে, কেউ কেউ মনে করছেন, আদালত যদি পুনঃতদন্তের নির্দেশনা দিতেন, তাহলে হয়তো সত্যিকারের দোষীদের খুঁজে বের করা সম্ভব হতো।
গ্রেনেড হামলার পটভূমি
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ২৪ জন নিহত হন এবং আহত হন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাসহ কয়েকশত নেতা-কর্মী। এ মামলাটি বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোর একটি।
ব্যারিস্টার মাহবুব শফিকের এই বক্তব্য মামলার বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ধরনের মন্তব্য মামলার পরবর্তী প্রক্রিয়া ও এর আইনগত জটিলতাকে আরও গভীর করতে পারে।