
টোকিওতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস শুক্রবার “নতুন বাংলাদেশ” গঠনে জাপানি কোম্পানিগুলোর সহায়তা কামনা করেছেন এবং দেশটিতে আরও বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাপান সফরের তৃতীয় দিনে টোকিওতে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ আহ্বান জানান, যেখানে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য ব্যবসায়িক স্বার্থ রয়েছে এমন বেশ কয়েকজন জাপানি কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।
“আপনাদের সবাইকে দেখে খুব ভালো লাগছে; এটা আমাদের আশ্বস্ত করে,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “গত ১০ মাসে আমরা এক টুকরো এক টুকরো করে জিনিসগুলো গড়ে তুলেছি; সেখানে জাপানের সহায়তা অত্যন্ত কার্যকর ছিল।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বৈরাচারী শাসনের প্রস্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশ “একটি প্রাণের সংকেত” পেয়েছে এবং তিনি “একটু নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ” চেয়েছেন দেশকে গুছিয়ে তুলতে।
তিনি আরও বলেন, “আজ আমরা এমন এক পরিস্থিতিতে আছি, যখন আপনাদের সহায়তা আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আমাদের অঙ্গীকার একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা। আমরা পুরাতন বাংলাদেশ থেকে দূরে থাকতে চাই।”
প্রধান উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান ঘাটতিগুলো খুব শীঘ্রই কাটিয়ে উঠবে।
“আমরা আশা করি সেগুলো অতীত হয়ে যাবে। এটি জাতির জন্য সবচেয়ে বড় সুযোগ। আমরা সবাই একটি ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছি, সেটিকে আমরা অতীতে রাখতেই চাই,” বলেন তিনি।
জেইটিআরও’র চেয়ারম্যান ও সিইও নোরিহিকো ইশিগুরো অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
জাপান-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কমিটির (JBCCEC) চেয়ারম্যান এবং মারুবেনি কর্পোরেশনের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও নির্বাহী কর্পোরেট উপদেষ্টা ফুমিয়া কোকুবু বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসা করা ৮৫ শতাংশ জাপানি কোম্পানি আশা করছে, এ বছরই ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (EPA) স্বাক্ষরিত হবে। তিনি কর নীতিতে সংস্কারেরও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত শিনইচি সাইদা বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি রক্ষা করেছে, তা হলো অর্থনীতি; কোনো প্রকল্প বন্ধ হয়নি, কোনো ব্যবসাও স্থগিত হয়নি।”
আলোচনায় আরও অংশ নেন সুমিতোমো কর্পোরেশনের সিইও শিংগো উএনো; ইউগ্লেনা কো. লিমিটেডের সিইও মিৎসুরু ইজুমো; জেরা’র চিফ গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিস্ট স্টিভেন উইন; জেবিআইসির সিনিয়র ম্যানেজিং ডিরেক্টর কাজুনোরি ওগাওয়া; ওনোদা ইনকের প্রেসিডেন্ট শিগেয়োশি ওনোদা; জেইটিআরও’র নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজুয়া নাকাজো এবং আইডিই-জেইটিআরও’র নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মায়ুমি মুরায়ামা।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন।